ট্রেকে যাব জানি কিন্তু কোথায় যাব তা নিয়ে দোলাচলে| গত ৪ মাস ধরে এক জায়গার কথা চলছে| সেটা বাতিল হল|তারপর আবার একটা জায়গা ঠিক হল| তাও বাতিল|উত্তরাখন্ড সরকারের আদেশের কারনে বুগিয়াল আছে এমন জায়গায় অনুমতি পাওয়া যাচ্ছে না| হাতে যাওয়া আসা বাদ দিয়ে ১০ দিন সময়| ২৫ শে মে ২০১৯ থেকে ৮ ই জুন,২০১৯| এত দিন সময় নেওয়া হয়েছিল কারন বাতিল হয়ে যাওয়া ট্রেকের জন্য| ট্রেনে উঠলাম| হাতে প্রচুর সময়| অথচ কোথায় যাওয়া হবে তখনও ঠিক নেই| টিকিট দিল্লী পর্যন্ত| তাই সব দিক খোলা| এক সময় সবাই ঠিক করলাম কিছু না হলে শেষ অবধি তো বাঙালীর প্রিয় ট্যুরতো আছেই , মানে সেই আমাদের Childhood fantasy Himalaya "সিমলা-মানালী বা হরিদ্বার দেরাদুন মুসৌরী"| বাবা - মা এর হাত ধরে যাকে চিনেছিলাম। হতাশার সাথে কেউ কেউ বলল এটাই বাকী ছিল| এক সময় ঠিক করলাম রুপিন পাস যাই| কিন্তু খবর পেলাম রুপিনে তুষারঝড়ের কারনে মৃত্যু ঘটায় রুট বন্ধ| সব দিকেই যেন হতাশা| ১০ দিনে কি করব? কেউ বলল জোশীমঠের কাছে কোনো একটা জায়গায় টেন্ট পিচ করে ফোন ফ্লাইট মোডে করে দেবো| বাড়িতেও জানবে যে ট্রেক করছি আবার টেন্টেও থাকছি| ইয়ার্কিচ্ছলে কত ভাবনা| সময় নষ্ট আর করা যাবে না| অবশেষে ওয়েটিং লিষ্টে রাখা জোশীমঠের দীনেশ ভাটকে ফোন লাগালাম| ব্যস্ ফোনের ওপার থেকে নম্র ভাবে উত্তর এল, "হো য্যয়গা"| পুরো ওয়েটিং লিষ্টের টিকিট কনফার্ম হয়ে লোয়ার বার্থ পাওয়ার মত অবস্হা| অবশেষে ঠিক হল দুটো ট্রেককে মার্জ করিয়ে দেওয়া হবে| আমরা ভ্যাবাচ্যাকা খেলাম| মানে? কি সেই ট্রেক ? শুনুন তবে: কুয়ারী পাস-পাঙ্গারচুলা শৃঙ্গ করে বাগিনী গ্লেসিয়ার হয়ে চ্যাঙবাঙ্ বেস ক্যম্পে থেকে ঋষিকুন্ড| কিছুক্ষন বাকরুদ্ধ| দুটো ট্রেককে এরকম ভাবে একসাথে কি ভাবে করব? শরীর সাথ দেবে তো? কেউ কেউ আবার হাল্কাচালে বলল যখন এদিকে এসেছি এভারেষ্টটাও করে যাই| হাসব না কাঁদব| যাই হোক, দিল্লী থেকে গাড়ী করে হৃষীকেশ| পরের দিন ১২ ঘন্টা যাত্রা করে একেবারে দীনেশজীর আউলির হোম ষ্টে তে| অসাধারন ভিউ| সামনে সবুজ গালিচা| তারপর প্রবল পরাক্রমশালী হিমালয় শৃঙ্গ| ডান দিকে নন্দাদেবী, হাতী ঘোড়ী পর্বত হাতছানি দিচ্ছে| হনিমুনেও মনে হয় এত ভালো ঘর পাওয়া যায় না| আর আমরা ৮ জন এসেছি ট্রেক করতে| দুদিন আগে যেখানে কিছু ঠিক ছিল না| সেখান থেকে এত সুন্দর ব্যবস্হাপনা| সন্ধ্যাবেলা দীনেশজী এলেন| রুট ঠিক হল| কারন বুগিয়াল ক্যাম্পিং বন্ধ হএয়ায় ক্যাম্প সাইট পরিবর্তিত হচ্ছে| কথাবার্তায় জানলাম দীনেশজী হলেন ইন্ডিয়ান অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের থেকে সার্টিফিকেট প্রাপ্ত স্কি চ্যাম্পিওন এবং স্কি ইনস্ট্রাকটর| আউলির একছত্র অধিপতি, যার জীবন সংগ্রাম শিক্ষনীয়| যাই হোক, উনিও বলে উঠলেন, কুয়ারী পাস-পাঙ্গারচুলা হবে আমাদের "practice trek"। তারপর বাগিনী হিমবাহ হয়ে চ্যাংব্যাং বা গড়ুর বেসক্যাম্পে থেকে ঋষিকুন্ড অবধি হবে মেন ট্রেক| আমাদের কারোর কারোর চক্ষুছানাবড়া| লোক যেখানে আলাদা আলাদা ভাবে এই ট্রেক গুলো করে, আমরা সেখানে এক সাথে মারব|
পরের দিন রওনা দিলাম কুয়াড়ি পাসের উদ্দেশ্যে। প্রথম দিন গরশন বুগীয়াল পার করে পাহাড়ের ঢাল বরাবর পথ চললাম। প্রথম দিন হিমালয় একটু কপাল কুঁচকালো। মানে নতুন অতিথিদের আপ্যায়ন করতে দ্বিধা বোধ করছিল। দুপুরের দিকে তা সব ঠিক হয়ে যায়। বিকালে আমরা হাজির হলাম তালি লেকের নিচে জঙ্গলে । ওখানেই ক্যাম্প পড়ল।গাইড এসে বললেন তাড়াতাড়ি ডিনার হবে কারণ পরের দিন রাত তিনটের সময় যাত্রা শুরু করতে হবে। গন্তব্য পাঙ্গারচুলা শৃঙ্গ। যথারীতি রাতের খাবার খেয়ে শুয়ে পড়লাম। ঘুম বলতে ওই তিন চার ঘন্টা। রাত দুটোয় উঠে পরলাম। হেড ল্যাম্প জ্বালিয়ে শৃংখলাবদ্ধ হয়ে চলা শুরু করলাম গন্তব্যের দিকে।দীর্ঘ চার পাঁচ ঘন্টা চড়াই পেরিয়ে হাজির হলাম পাঙ্গারচুলা স্নো ফিল্ডে। কিছু জন শৃঙ্গের দিকে গেল। কিছু জন রয়ে গেল। সেখানে আমাদের সঙ্গী হিমালয় পর্বত শৃঙ্গ। নাম গুলো বললে গায়ে কাঁটা দেবে। কে নেই সেই লাইন এ? চৌখাম্বা, নীলকন্ঠ, কামেট, মুকুট, নারায়ন, হাতি, ঘোরী, দ্রোনাগিরি, নন্দাদেবী। বেলা বাড়তে থাকায় থাকায় আর রিস্ক না নিয়ে আমরা সবাই নিচের দিকে হাঁটা লাগালাম এবং পৌছালাম লোয়ার খুলাড়া ক্যাম্পসাইট এ। তাড়াতাড়ি সন্ধ্যে যেন নেমে এলো। পরেরদিন রওনা দিলাম আখরোট গেদা নামক জায়গায়। গেদা নামের মানে হলো ' উদ্যান' । অর্থাৎ আমাদের টেন্ট পড়লো আখরোট বাগানে। ঐদিন হালকা দিন। বেশ আরামসেই কেটে গেল।
এবার এলো সেই দিন। যেদিন থেকে আমাদের প্রধান আকর্ষণ এর দিকে যাত্রা শুরু। অর্থাৎ বাগিনি হিমবাহ হয়ে ঋষিকুন্ডের দিকে অভিযান। আখরোট গেদাকে বিদায় জানিয়ে দুপুর বেলা হাজির হলাম ঢাক নামক গ্রামে। ওখানে দিনেশজি আগে থেকেই গাড়ির ব্যবস্থা করে রেখেছিল। গাড়িতে মালপত্র উঠিয়ে আমরা ১ ঘন্টা পর হাজির হলাম জুম্মা নামক গ্রামে। জুম্মা থেকে তিন কিলোমিটার পথ হেঁটে পৌছালাম রুইং গ্রামে। পুরো এলাকাটাই সেনাবাহিনী দের এলাকা। কারণ সামনেই তিব্বত সীমান্ত। ঐদিনের মতো তাঁবু পড়লো ওখানে। পরের দিনের গন্তব্য দ্রোনাগিরি গ্রাম। সকালে যাত্রা শুরু করে এক দিকে গভীর খাদ আর আর একদিকে পর্বতের দেওয়াল কে সঙ্গী করে এগোতে থাকলাম। বিকেলে দ্রোনাগিরি গ্রামে পৌছালাম। কথিত আছে কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের আগে দ্রোণাচার্য নাকি এই গ্রামেই তপস্যা করেছিলেন। দ্রোনাগিরি গ্রামটি ৪-৫ মাসের জন্য বসবাসের যোগ্য। কারণ নভেম্বর মাসে পর অত্যধিক তুষার পাত এর ফলে গ্রামে আসা অসম্ভব হয়ে ওঠে। তাই গ্রামের বাসিন্দারা নিচের দিকে বিশেষত কর্ণপ্রয়াগ বা যোশীমঠে নেমে যায়।
দ্রোনাগিরি পৌছে দেখি সদ্য গ্রামে আসা ৬ থেকে ৭ জন গ্রামের ছেলে ব্যাট-বল নিয়ে ক্রিকেট ম্যাচ খেলছে। আমরাও তাদের সাথে শামিল হয়ে গেলাম। একেবারে হাই অল্টিটিউড ক্রিকেট ম্যাচ। গ্রামের ছেলেদের নিয়ে একটা টিম হল আর আমাদের নিয়ে একটা টিম। কেউ আবার নামকরণ করে দিল Himalayan Crow ভার্সেস Bengal Tiger। জিতলাম আমরাই মানে Bengal Tiger। কিন্তু আমি তাকে খুঁজছি যে ওদের টিমটার নামকরণ করেছিল Himalayan Crow। কমসেকম Himalayan Leopard বা Himalayan Bear টাইপের নাম দিতে পারতো। তা না একেবারে Crow। একটু সামঞ্জস্য টাইগারের সাথে রাখাই যেত।যাইহোক ইন্ডিয়ান ক্রিকেট টিম ও এত হাই অল্টিটিউড এ ম্যাচ খেলে নি। একটা ম্যাচ খেলেই ক্ষান্ত থাকতে হলো,কারণ বেশি হিরো গিরি দেখাতে গেলে গায়ে হাত পায়ে ব্যাথা হতে পারে। পরের দিন অল্প হাটা তিন থেকে চার কিলোমিটার। দুপুর দুপুর পৌঁছে গেলাম লাঙ্গা টুলী তে। ঋষি গঙ্গা নদীর সাথে কথোপকথন করে সন্ধ্যা টা কেটে গেল। আবহাওয়া একটু খারাপ হলেও পরের দিন মানে বাগিনি হিমবাহের এর উপর দিয়ে চ্যাংব্যাং পিক্(তিব্বতী নাম) বেস ক্যাম্প রওনা হওয়ার দিনে আবহাওয়া ঝকঝকে। গাছের পরিমাণ কমতে থাকল। শুধু বোল্ডারের উপর দিয়ে পথ চলা। বেঙ্গলি বেস ক্যাম্প ছাড়িয়ে আরও এগিয়ে গেলাম। দীর্ঘ পাঁচ ছয় ঘন্টা পর পৌছালাম গড়ুর পিক বেস ক্যাম্পে।যেটা কে চ্যাংব্যাং বেস ক্যাম্প ও বলা হয়। জায়গাটিতে পৌঁছে মনে হল আমাদের জীবন অতি তুচ্ছ এই পার্থিব সুখ মোহ আতিশয্য কিছুই নয়। চারিদিকে বিশাল বিশাল পর্বতের দেওয়াল। তাড়াতাড়ি রাতের খাওয়া খেয়ে শুতে গেলাম। কিছুক্ষণ পর হঠাৎ কড়্ কড়্ আওয়াজ শুনে ঘুম ভেঙে গেল। টেন্ট থেকে বেরিয়ে গাইড কে জিজ্ঞেস করলাম কি হয়েছে।গাইড নির্লিপ্তভাবে বললো ওগুলো হিমবাহ ফাটার আওয়াজ। সেই শুনে আমাদেরই কারোর কারোর ফাট ছিল। কারণ দুপুর বেলায় আমরা দূরের এক পর্বতে তুষারধ্বস দেখেছি। সে কি আওয়াজ। যাইহোক কোনরকমে চোখটা বুজে ঘুমালাম কারণ পরের দিন সকাল সকাল উঠতে হবে। কারণ পরের দিনই অন্তিম স্থানে পৌঁছাতে হবে। লক্ষ্য ঋষি কুন্ড।
বেস ক্যাম্প ছাড়িয়ে এগোতে থাকলাম। কখনো ৪৫° আবার কখনো ৭০°-৭৫° পাহাড়ের ঢাল বেয়ে উঠলাম। কিছুক্ষণ পর এমন একটা জায়গায় পৌছালাম যেখান থেকে মনে হল কোন বাস্তব জগতে নয় দাঁড়িয়ে রয়েছি রূপকথার মঞ্চে। সামনে মোনাল পিক, তার ডান দিকে কলঙ্ক পিক এবং চ্যাংব্যাং পিক। গাইড বলল নিচে দেখতে। দেখলাম নিচে ঋষি কুন্ডের গাঢ় নীল জল আমাদের ডাকছে। এবার নামতে হবে ঋষি কুন্ডের এর দিকে। প্রায় ৪০০ মিটার নামা । তাও আবার খাড়াই। প্রায় ৭০° । আস্তে আস্তে নেমে পড়লাম। হিমালয়ের শৃঙ্গ কে সাক্ষী রেখে কুণ্ডের ধারে পর্বত দেবতাদের পুজো করলাম। যেন এক স্বর্গীয় অনুভূতি।
পুরোটাই গ্লেসিয়ার জোন। যেন আমরা দাঁড়িয়ে রয়েছি মৃত্যু উপত্যকায়। প্রায় আধ ঘন্টা কাটিয়ে আমরা ফেরার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। কারণ অল্প অল্প মেঘ ঢুকতে থাকলো এই মৃত্যু উপত্যকা রুপি বাগিনি হিমবাহের উপর।অবশেষে আবার আমরা ফিরে এলাম বেস ক্যাম্পে। দুপুরের খাবার খেয়ে ওইদিনই রওনা দিলাম দ্রোনাগিরির উদ্দেশ্যে। বিকেল বিকেল দ্রোনাগিরি তে পৌছালাম। সবার চোখ মুখে ক্লান্তিকর তৃপ্তির ছায়া। ঐদিন দ্রোনাগিরিতে কাটিয়ে পরের দিন আমরা ফিরে এলাম আউলিতে। শেষ হলো এবারের মতো আমাদের হিমালয় দর্শন। একসময় ভেবেছিলাম এবারে কোথাও যেতেই পারব না। কারণ এবারে হিমালয় যেন কিছুটা হলেও রুদ্রমূর্তি রূপ নিয়েছিল। হিমাচল তো পুরো অশান্ত। গাড়োয়াল হিমালয় খালিহাতে ফেরালো না। আগামী এক বছরের জীবনীশক্তি নিয়ে আমরা ফিরলাম আমাদের ঘরে।
(সবশেষে তাঁদের আত্মার শান্তি কামনা করি, যাঁরা এই বছর হিমালয় কে ভালবেসে মৃত্যুর কোলে নিজেদের সঁপে দিয়েছেন। কাঞ্চনজঙ্ঘা অভিযানে মৃত কুন্তল কাঁড়ার এবং বিপ্লব বৈদ্য, মাকালু অভিযানে মৃত দীপঙ্কর ঘোষ, এভারেস্টে হারিয়ে যাওয়া অভিযাত্রী এবং শেরপাদের প্রণাম জানাই। এমন কি বুরান পাস ফেরত তুষারঝড়ে মৃত দেবাশীষ বাবুর আত্মার শান্তি কামনা করি।)
তবুও আমরা হিমালয় যাবো কারণ হিমালয় আমাদের শান্ত হতে শেখায়,কঠোর হতে শেখায়,দৃঢ় হতে শেখায়। সবাই ভালো থাকবেন। আর সুযোগ পেলেই হিমালয়ে হাঁটবেন। সবশেষে একটি কথা হিমালয় যত স্বচ্ছ হবে আমাদের সভ্যতাও ততো পরিষ্কার থাকবে।
স্বচ্ছ হিমালয়....সবুজ হিমালয়....
(Clean Himalaya.... Green Himalaya....)
Name- SUBHRADEEP JASHU
Age- 32
Profession- SERVICE(BANKER)
City- HOWRAH
Hobbies- PHOTOGRAPHY(WILDLIFE &LANDSCAPE) , TREKKING, MOUNTAINEERING,
Previous Tours-
Unexplored area of Jharkhand(Giridi ,Munidi ,Bhatinda falls ,Rajrappa, Hudru)
Satna- Khajuraho-Jabalpur-Chitrokoot, Rajasthan, Vizag- Araku- Hyderabad- Jagdalpur, Shimla-Manali-Rohtang, Lucknow-Nainital-Almora-Ranikhet-Binsar-Koushani, Kerala with Kanyakumari
Bhutan, Gujrat-Daman-Diu-Gir,Delhi-Agra-Mathura-Vrindavan-Bharatpur Bird Sanctuary, Gopalpur-Taptapani, Goa-Dudhsagar Falls, Nepal(Kathmandu-Pokhra-Chitwan-Lumbini-Monokamona Temple-Nagarkot)
West Bangal(Darjeeling-Bankura-Bishnupur- Mukutmanipur-Bakkhali-Talsari-Purulia-Baranti etc)
Haridwar-Dehradun-Mussorie-Rishikesh, Amritsar-Dalhousie-Dharamsala
Tadoba National Park(Wildlife Photography)
Meghalaya(Shillong-Cherapunjii-Dawki-Mawlinlong-Krangsuri)
Vizag- Araku, Ranthambhore National Park(Wildlife Photography) & Bhangarh
Sundarban Mangrove(Wildlife Photography)
Lucknow & Dudhwa National Park(Wildlife Photography), Latpanchar(Bird Photography)
TREKKING
Deoriatal- Tunganath-Chandrashila, Kedartal via Gangotri, Valley of Flowers-Hemkund Sahib- Badrinath, Bali/Yamunetri Pass via Har Ki Doon, Bagini Glacier- Changabang Base Camp