গতবছর এই সময়টা লন্ডনে ছিলাম…...যেটা আমার প্রথম বিদেশ সফর। এটা নিয়েই ধারাবাহিক ভাবে লিখব ঠিক করেছি “লন্ডনের দিনলিপি” । TripSee র জন্যেই আমার এই লেখা । অনেকদিন ধরে পায়েল আর শালিনী আমাকে লেখার জন্য বলছিল । TripSee র সাথে কেন জানি না একটা আত্মিক সম্পর্ক তৈরি হয়ে গেছে ।তাই ওরা যখন লেখার জন্য বলল,অনুরোধটা ফেলতে পারলাম না। লন্ডনের প্রতিটা দিনের বর্ণনা লেখার আগে কিছুটা প্রাককথন।
২০১৯ এর প্রথম থেকেই ঘুরে বেড়াতে শুরু করলাম। হঠাৎ করে একা হয়ে গেলাম । এই একাকিত্ব আর সহ্য করতে পারছিলাম না। একবার ভাবলাম কোন কাজে যোগ দিই। তারপর ভেবে দেখলাম, না আর কাজ নয়, এর থেকে অনেক ভালো ঘুরে বেড়ানো। প্রথমে ত্রিপুরা, তারপর কেদার বদ্রী ঘুরে এসেই ঠিক করে ফেললাম বিদেশ যাব। যেমন ভাবা তেমন কাজ। শুরু হলো প্রস্তুতি। যেহেতু আমার মেয়ে আগে লন্ডনে ছিল, ঐ সব ভিসা, টিকিট ইত্যাদির ব্যবস্থা ওই করে দিল। আমার ভাগ্নে আছে লন্ডনে, তাই ওর স্পনসরশিপের জন্য ট্যুরিস্ট ভিসা পেতে কোন অসুবিধা হলো না। দিল্লী থেকে টিকিট কাটলাম আবুধাবি হয়ে লন্ডন। কলকাতা থেকে অনেক কম দামে পেলাম। এথিয়াড এয়ারওয়েস। হাওড়া থেকে ট্রেন রাজধানী তে দিল্লী। আমার এক বন্ধুর বাড়ীতে রইলাম দিল্লী পৌঁছে। পরের দিন আমার ফ্লাইট।সেভাবেই টিকিট করা হয়েছিল।
বিকেল ৫-৩০ এ ফ্লাইট। ইন্টারন্যাশানাল ফ্লাইট। তাই ঘন্টা তিনেক আগে এয়ারপোর্টে পৌঁছলাম। এর আগে বিদেশ যাবার কোন অভিজ্ঞতা ছিলনা। লাগেজ স্ক্যানিং, বোর্ডিং পাশ, ইমিগ্রেশান, সিকিউরিটি চেকিং ঘন্টাখানেকের মধ্যেই হয়ে গেল। হাতে অনেক সময়। একটা কফি নিয়ে লাউঞ্জে বসে বই পড়া, মাঝেমাঝে হোয়াটস অ্যাপ, ফেসবুক।মেয়ের পাখি-পড়ানো ডু আর ডোন্ট ফলো করে চলেছি। বোর্ডিং টাইমের সময় হোল, উঠে বসলাম নিজের জায়গায়।ডোমেস্টিকের তুলনায় ব্যবস্থাপনা বেশ ভালই,। প্রতিটা সিটের সামনে মনিটার, সিনেমা, গান শোনা এমনকি ফ্লাইটের অবস্থান, গতি-প্রকৃতি, কোন কোন দেশের উপর দিয়ে যাচ্ছে, সব দেখা যাবে। প্লেন আকাশে উড়ল আর দেশের সাথে, মেয়ের সাথে সব যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল। কিছুক্ষন পরেই এসে গেল প্রচুর খাবার…..ফলের রস, হট-কোল্ড ড্রিংক্স । অভ্যাস না থাকলে প্লেনে মদ না খাওয়াই ভাল, যেহেতু অনেক জার্নি, শরীরের উপর খুব প্রভাব পড়ে। অবশ্য যাঁরা অভ্যস্থ তাঁদের কথা আলাদা।অনেকেই খাচ্ছে দেখলাম।
আমার পাশের সিটে একটি মেয়ে, দিল্লীতে বাড়ী, যাবে ম্যানচেস্টার। সেখানেই কোন ইউনিভার্সিটি থেকে এম টেক করে ঐ শহরেই চাকরীতে জয়েন করতে যাচ্ছে।নাম শুনলাম রাজিন্দার কাউর। পাঞ্জাবি মেয়ে, বেশ সপ্রতিভ। সে বহুদিন ধরেই যাতায়াত করছে। চার ঘন্টার জার্নি। সবাই নিজের খুশীমত কাজে ব্যস্ত।কেউ সিনেমা দেখছেন, কেউ বই পড়ছেন, নয়তো কম্বল জড়িয়ে ঘুম। আমি মনিটারে দেখছিলাম কোন কোন দেশের উপর দিয়ে যাচ্ছে?কত স্পীডে যাচ্ছে? এইসব। তারপর একসময় আমারও কখন চোখ বুজে গেছে জানিনা। সবকিছু নিয়ে একটা আশঙ্কা, টেনশান, চিন্তা তো ছিলই। কতক্ষন ঘুমিয়েছি জানিনা, ঘুম ভাঙল এয়ার হোস্টেসের ডাকে। কিছুক্ষন বাদেই আবুধাবীতে নামব। এখানে সাত ঘন্টার স্টপওভার। অবশেষে নামলাম আবুধাবীতে।পাশে বসা দিল্লীর মেয়েটি কে অনুরোধ করলাম এয়ারপোর্টে যেখানে ইন্টারনেট বা ওয়াই ফাই আছে সেখানে নিয়ে যেতে, যাতে মেয়ের সাথে বাড়ীতে যোগাযোগ করতে পারি। যদিও এখান থেকে ওর ম্যানচেস্টারের জন্য আলাদা ফ্লাইট । অবশ্য আমার থেকে আরো এক ঘন্টা পর মেয়েটির ফ্লাইট। চোখ ধাঁধিয়ে যাবার মত এয়ারপোর্ট। বিশাল বিশাল ডিউটি ফ্রী শপে ভর্তি, কি নেই এই সব দোকানে! হাঁ করে দেখছি সব। যাচ্ছি তো যাচ্ছি, শেষ আর হয় না। বেশকিছুক্ষন হাঁটার পর একটা জায়গায় এসে মেয়েটি বলল এখানে ফ্রী ওয়াইফাই আছে, আমি যোগাযোগ করতে পারি হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে। বাড়ীতে মেয়ের সাথে যোগাযোগ হোল। আমি নিশ্চিন্ত হলাম , মেয়েও খুবই চিন্তা করছিল। মেয়েটিকে অনেক ধন্যবাদ দিলাম।প্রায় সারারাত এখানে কাটাতে হবে, রাত্রি ২-৩০এ লন্ডনের ফ্লাইট। ঘুরে ঘুরে দোকান গুলো দেখছি। জিনিষের প্রচুর দাম। যে চকলেট দিল্লীতে ১০ টাকা, সেই একই জিনিস ওখানে ৭০ টাকা। খিদে তেষ্টা দুটোই পাচ্ছিল। কিন্তু যা খাবারের দাম, দেখে বুঝলাম আজ রাতে ভুখাই থাকতে হবে। ওখানে টাকা দিনার কিন্তু ইন্ডিয়ান কারেন্সি নেবে কনভার্ট করে।মন থেকে সায় দিচ্ছিল না অত টাকা খরচ করতে।কিছুক্ষন পর দেখি ঐ মেয়েটি কিছু চকলেট ও একটা জলের বোতল নিয়ে হাজির আমার জন্য। আমি তখন খুবই অপ্রস্তুত। মেয়েটি খরচ করে নিয়ে এলো অথচ আমার কাছেও টাকা রয়েছে যথেষ্ট। মেয়েটি বলল, আসুন আমরা দুজনা মিলেই খাই, এই টাকাগুলো আমার ওখানে গিয়ে কোন কাজে লাগবেনা, আমি দু বছর বাদে ফিরব। লজ্জা লজ্জা করেও নিলাম, একটা অপরাধবোধ হতে লাগল। মেয়েটি অনেক্ষন বসে গল্প করল।ওর বাড়ীর গল্প, পড়াশুনো, চাকরী, ভালই সময় কেটে গেল। ঘুরে ঘুরে এয়ারপোর্টটা দেখলাম। তিন চারটে কলকাতা এয়ারপোর্টের সমান হবে এত বিশাল, চারিদিকে আলোর রোশনাই, কাঁচের বাইরে আবুধাবী শহর দেখা যাচ্ছে, কেমন মায়াবী লাগছে।কোথা দিয়ে সময় কেটে গেল। সিকিউরিটি চেকিং এর সময় হয়ে এলো, মেয়েটিকে বিদায় জানালাম।প্রথম বিদেশের মাটিতে মেয়েটি যেভাবে আমাকে সাহায্য করেছিল তা কোনদিন ভুলব না।মেয়েটি না থাকলে কি করতাম আমি কে জানে!
আবুধাবীতে কিন্তু জবরদস্ত সিকিউরেটি চেকিং হলো। খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে সব দেখল,স্ক্যানিং করল।মাছি গলবার জো নেই। খুবই শৃঙ্খলাপরায়ন।উঠে বসলাম লন্ডনের হিথরো যাবার ফ্লাইটে। আবার সেই এথিয়াড এয়ার ওয়েসের ফ্লাইটেই। এখান থেকে ৫ ঘন্টার জার্নি।আবার সেই একইরকম ব্যাবস্থা। প্রচুর খাবার, ড্রিংক্স…..এলাহী সব আয়োজন। নিজেকে আর অনভ্যস্ত মনে হচ্ছেনা। সবকিছুর সাথে কেমন অ্যাডজাস্ট করে ফেলেছি।মনের মধ্যে একটা ভাল লাগা শুরু হলো।খাবার গুলো খেয়ে নিয়ে শোবার চেষ্টা করলাম। কিন্তু ঘুম আসে কৈ! ভেতর ভেতর একটা উত্তেজনা রয়েই গেছে।প্লেনের ভেতর আলো আঁধার,স্বপ্নপুরী লাগছে যেন। প্রায় সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে। কম্বলটা সারা শরীরে জড়িয়ে চোখ বুঁজে পড়ে রইলাম, মাঝে মাঝে মনিটারে চোখ যাচ্ছে ৩২ হাজার ফুট ওপর দিয়ে যাচ্ছে, নীচে শুধু কালো অন্ধকার, একটার পর একটা দেশ পেরিয়ে উড়ে চলেছে...... কাল সকালে লন্ডন.!!..কত বড় রাত !
তাহলে আমি যাচ্ছি, নুপুর(আমার পরলোকগতা সহধর্মিণী) ও কি আমার সাথে যাচ্ছে!! কি জানি, কেনো মনে হোল নুপুর রয়েছে আমার সাথেই।চলো নুপুর, সাথে থাকো তুমি। একসাথেই তো যাওয়ার কথা ছিল।
[30/08, 15:39] লন্ডন শহরে আমার প্রথম দিন....।সকাল ৭ টা, হিথরো এয়ারপোর্ট এ নামলাম। আমার প্রথম বিলেত সফর।দিন রাত সব গোলমাল হয়ে গেছে...জীবনের সবচেয়ে বড় রাত কাটালাম..।ইমিগ্রেশান পর্ব্ মিটিয়ে বাইরে আসলাম। আমাকে নিতে এসেছিল আমার এক জামাইবাবু ও ভাগ্না।এয়ারপোর্ট থেকে বেরিয়েই লন্ডনের সেই বিখ্যাত টিউব ..একরাশ অবাক চোখে হাঁ করে দেখতে দেখতে মেয়ের দেওয়া অয়েষ্টার কার্ড রিচার্জ করে উঠে বসলাম।খুব বেশী লোকজন নেই...এক মহিলা কুকুর নিয়ে উঠলেন...তবে কুকুরের বসার জায়গা হলো না,..আমার দিকে জুল জুল করে তাকিয়ে বলার চেষ্টা করছিল তুমি ওঠো আমি বসব…
পরিস্কার পরিচ্ছন্ন টিউবে জানলা দিয়ে ঘর বাড়ী গুলো দেখতে দেখতে মনে হচ্ছিল কোন এক হিল স্টেশানের যেমন ছোট ছোট বাড়ী হয় অনেকটা সেইরকম...আমাদের দেশে সিমলার মত...
নাবলাম wembley park স্টেশানে।ওখান থেকে হেঁটে ভাগ্নার বাড়ী।kings burry...ভারী ভাল জায়গা..প্রায় প্রত্যেকের বাড়ীর সামনে বিভিন্ন রকমের ফুলের গাছ..নির্জন পরিবেশ।ঠান্ডা খুব একটা নেই কিন্তু হাওয়া দিচ্ছে।তাপমাত্রা দেখলাম ১৮ - ১৯ ডিগ্রির এর কাছে।
জার্নির ধকলে স্নান সেরে খেয়েদেয়ে উঠেই একটা লম্বা ঘুম লাগালাম।ঘুম থেকে উঠে শরীরটা বেশ ঝর ঝরে লাগল।বেড়িয়ে পড়লাম wembly stadium দেখতে।বাড়ীর কাছেই, তাই হেঁটেই গেলাম।প্রচুর গাড়ী চলছে কিন্তু কোন শব্দ নেই।বিখ্যাত দোতলা বাস....দোকানপাঠ ছিমছাম..হাঁটতে বেশ ভালই লাগছে..মেয়ে বলেছিল costa,stansburg এ কফি খেতে, প্রথমদিন তাই ঢুকলাম না।wembly stadium....ফুটবলের মক্কা..পৃথিবীর বিখ্যাত ফুটবল stadium...এখানে অলিম্পিক ফাইনাল,ফিফা ওয়ার্ল্ড কাপের ফাইনালও হয়েছে।
কত শুনেছি, টিভি খবরের কাগজে পাতার পর পাতা লেখা থাকত এই stadium এর ফুটবলের কথা।ইংল্যান্ডের নায়ক ববি মুরের কথা...চোখের সামনে দেখছি ভাবতেই পারছিনা।পুরো stadium কে একপাক ঘুরে নিলাম।অনেকেই হাঁটাহাঁটি করছে, দৌড়চ্ছে শরীর চর্চ্চায় ব্যস্ত।একজনকে দেখলাম বসে রামদেবের কপালভাতী করছে, বাঙ্গালী বলেই মনে হলো ..এ জিনিষ আর কে করবে!!বেশ কিছুক্ষন বসে থাকার পর ঘোর কাটল। পথে wembly লাইব্রেরী তে ঢুকলাম...বেশ বড় লাইব্রেরী, প্রচুর বইপত্র, সবাই নিজের মত পড়াশুনো করছে।বাড়ী ফিরলাম, পরের দিন কোথায় যাব তার প্ল্যান করে নিলাম।রাত্রে খাওয়া শেষ করে শুতে গেলাম রাত্রি ১২ টা...ওখানে মনে হয় ভোর হয়ে গেল, হিসাব মত ৪-৩০ বাজার কথা....
লন্ডন শহরে আমার দ্বিতীয় দিন…..
কাল রাত্রে বেশ শীত শীত করছিল, তাপমাত্রা প্রায় ১১ডিগ্রি ছিল, তাই ঘুমটা ঠিক জুতসই হয়নি..হিটার চালাতে হলো। ভোরের দিকে ঘুমিয়ে পরেছিলাম,উঠতে দেরী হোল।
এখানে আসার আগে কন্যা ও সুরজিৎ প্রতিদিনের একটা দিনলিপি তৈরি করে দিয়েছিল। কবে কোথায় যাব ইত্যাদি।ওরা যেহেতু এখানে আগে এসেছিল তাই ওদের জানা অজানা সব কিছু আমাকে উজাড় করে দিতে চেয়েছিল।আমার থেকে ওদের উৎসাহ বেশী ছিল। এই করবে, এই করবে না, এখানে যাবে, ওখানে যাবেনা ইত্যাদি ইত্যাদি...।কিন্তু সব কিছু তো আর ঐ ভাবে হয় না...।
রাত্রে প্ল্যান করার সময় জানতে পারলাম কাছেই রয়েল এয়ার ফোর্স মিউজিয়াম।ব্যাস, ওদের করে দেওয়া সব সিডিউল ঘেঁটে ঘ হয়ে গেল।এয়ার ফোর্সের গন্ধ পেতেই রক্ত চনমন করে উঠল।এই একটা জিনিস তো রক্তে মিশে আছে।তাই ঠিক করলাম সকালে ওখানেই যাব।হাঁটতে হাঁটতে বেড়িয়ে পড়লাম। অপূর্ব জায়গা, মন খুশী হয়ে যায়।এত যে হাঁটলাম, চারিদিকে দেখতে দেখতে কোন কষ্টই হলোনা।
এত সুন্দর আবহাওয়া।ছবির মতো সাজানো সব দোকানপাট।প্রায় সব বাড়ীর সামনেই ফুলের বাগান, আপেল গাছ ছাড়াও নাম না জানা আরো কত কি ফল ও ফুলের গাছ।পথে পড়ল স্বামীনাথনের মন্দির।
বেশ অনেকটা হাঁটার পর এসে পৌঁছলাম আমার স্বপ্নের রয়েল এয়ার ফোর্স মিউজিয়ামে। মোট ৬ টা হ্যাঙ্গার আছে। সেই স্পিটফায়ার থেকে শুরু করে আধুনিক বিমান,পাইলট ট্রেনিং, সিমুলেটিং চেম্বার, নানা সাইজের বোম্ব, মিসাইল, ড্রোন ছাড়াও আরও অনেক সাজ-সরঞ্জামে ভর্তি।
ঘুরতে ঘুরতে আমি ফিরে যাচ্ছিলাম ৯০ এর দশকে আমার যুবক বয়েসে...।সারা শরীরে শিহরন জাগছিল যখন নিজের অজান্তেই ইউনির্ফমে হাত দিয়েছিলাম।একটা পর একটা হ্যাঙগারে ঢুকছি আর আমার কাছে চমক।পৃথিবীর বিখ্যাত সব যুদ্ধ বিমান রয়েছে ।একদিন যে এসবের সাথে যুক্ত ছিলাম তাই ওখান থেকে আর চলে আসতে ইচ্ছে করছিল না। কিন্তু ফিরতে তো হবেই..আসার সময় আর হাঁটা নয়, লন্ডনের বিখ্যাত লাল দোতলা বাসে উঠে বসলাম।আবার এক চমক। কি ভাল ব্যবস্থা। কার্ড সোয়াইপ করে বাসে উঠলাম।
নির্দিষ্ট জায়গায় বাস দাঁড়াচ্ছে।প্রতি সিটের সামনে সুইচ।এত পরিস্কার পরিচ্ছন্ন এত ডিসিপ্লিন। কটায় বাস আসবে, কোন বাস কোথায় যাবে সব লেখা আছে । একদম সময় ধরে বাস চলছে ।কাউকে কিছু জিজ্ঞেস করার দরকার নেই ।অন্ধের মতো যাতায়াত করা যায় ।
বাড়ী ফিরেই খেয়ে দেয়ে শুয়ে পড়লাম ক্লান্তিতে চোখ জুড়ে গেল...আবার বিকেলে ঘুরতে বেরোতে হবে যে। বিকেলে বেরুলাম কাছেই Brent Reservour দেখতে। আবার সেই হাঁটা, এতে চারিদিকটা ভালভাবে দেখা যায়, অনুধাবন করা যায়। wembley parkএর কাছে বিশাল জলাশয়..চারিদিক ঘন জঙ্গল, অতি প্রাকৃতিক মনোরম পরিবেশ..জলে ক্যানয়, স্পীড বোট, বিকেলে বৃটিশরা কুকুর ও ছেলেমেয়েদের নিয়ে বেড়াতে বেড়িয়েছে।
বিভিন্ন জায়গায় ঘন হয়ে বসা যুবক-যুবতীর দল।ও দিকে তাকানো এদের কাছে bad manners।চারিদিক শুধু সবুজ আর সবুজ।যদিও এখন কিছু বাধা নিষেধ হয়েছে।এই জায়গা কে welsh harp ও বলে।সারাদিন কাটিয়ে দেওয়া যায়।সাহিত্যপ্রেমী দের আদর্শ জায়গা। আমি তো তা নই তাই চোখে একরাশ সবুজের বিষ্ময় নিয়ে ঘন্টা ২ সময় কাটিয়ে ফিরতেই হল...
Name- Debasish Bhattacharya