আজো আছে গোপন,
ভ্রমণপিপাসু মন।
ছুটে যাই সুযোগ পেলে,
যেখানে যেমন।
হ্যাঁ, ঠিক এই কারণে নানা ঝামেলায় যখন ছুটি নেওয়া যাচ্ছিল না, তখন এপ্রিলের গরমে আচমকা ছুটি পেয়েই কোথাও কিছু না পেয়ে ছুটলাম ঘাটশিলা। হ্যাঁ, ঘোরার পোকাটা কত ভয়ংকর হলে তবে এই প্ল্যান করে কেউ!! যাই হোক, ব্যবস্থা করে চলে গেলাম।রিসর্টে পৌঁছে খাওয়া দাওয়া সেরে একটু বিশ্রাম নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম ঘাটশিলার মূল আকর্ষণ বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্মৃতি বিজড়িত বাড়ি গৌরীকুঞ্জের উদ্দেশ্যে। যাওয়ার পথে ঘুরে গেলাম ফুলডুংরি টিলা যেখানে বসে বিভূতিবাবু অনেক লেখাই লিখেছেন। তবে হতাশ হলাম। কারণ জায়গাটা নোংরা এবং ইতস্ততঃ জিনিষপত্র দেখে বোঝা গেল যে বিকেলের পরে জায়গাটা আদৌ নিরাপদ নয়। যাই হোক চলে গেলাম বিভূতিবাবুর বাড়ি। মূল মাটির বাড়ি প্রায় ভগ্নপ্রায় হয়ে যাওয়ায় সরকারি তরফে সেখানে একটি পাকাবাড়ি করে দেওয়া হয়েছে যা এখন ওঁনার স্মৃতিবিজড়িত সংগ্রহশালা। ওনার ব্যবহৃত পোষাক , লেখার সরঞ্জাম, কিছু পাণ্ডুলিপির খসড়া, চিঠিপত্র রয়েছে। বুঝতে পারলাম এই সুন্দর পরিবেশ ওনার লেখনিতে কি আশ্চর্য ভাবে প্রভাব ফেলেছে।তবে একটু মন খারাপ হয়ে গেল এই ভেবে যে ওনার এই স্মৃতিভবনটি সরকার আরও একটু যত্ন নিতে পারতেন।
একটু এগলেই সুবর্ণরেখা নদী । তার আগে এক পশলা স্বস্তির বৃষ্টি হয়ে যাওয়াতে গরমের তীব্রতা অনেকটাই কমে গিয়েছিল। যাই হোক, Hindustan Copper Limited এর কারখানার পাশ দিয়ে গিয়ে বসলাম সুবর্ণরেখার তীরে। জল স্বভাবতই কম কিন্তু সেদিন বিকেলে সুবর্ণরেখার তীরে বসে আকাশে যে মেঘের খেলা আর প্রকৃতির শোভা দেখেছিলাম, সেটা গরমের কষ্টটা ভুলিয়ে দিয়েছিল। রাত্রিবেলা ফিরে টেরাসে বসে দেখেছিলা খোলা আকাশে তারার সমাহার।
পরের দিন গেলাম রংকিনী/রুক্মিনী মন্দিরে। কথিত ডাকাতরা নাকি এই দেবীর পুজো করে ডাকাতি করতে যেতো। সেই দিন বিকেলে ট্রেন ধরে ফিরে এলাম বাড়ি। স্বল্প এই ভ্রমণ ছিল দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাবার মতো। যাই হোক নেই মামার চেয়ে কানা মামা ভাল।
কীভাবে যাবেন ও কোথায় থাকবেন— যাওয়ার জন্য সেরা গাড়ি হাওড়া থেকে ইস্পাত এক্সপ্রেস। তাছাড়া হাওড়া থেকে ঘাটশিলা মেমু লোকাল ও আছে। (সময় পরিবর্তনশীল তাই যাচাই করে নেবেন)।
থাকার জন্য ঘাটশিলা স্টেশন চত্বরে হোটেল আছে। আর যদি একটু নিরিবিলি চান তাহলে গালুডি চলে আসতে পারেন। এখান থেকে টাটা, জামশেদপুরও যাওয়া যায় ঘুরতে অটো বা গাড়ি ভাড়া করে। সব হোটেলেই গাড়ির রেট চার্ট থাকে, যাচাই করে নিতে পারেন।
Name- Arijit Banerjee
Profession- Government Employee
City- Howrah
Hobbies- Photography, Music, Films, Mimicry, Stand-up comedy, Word plays
Previous Tours- Bishnupur, Mandarmani, Andaman, Murshidabad