আকাশ ডাকে আজ আমায়
পাহাড় ডাকে আজ আমায়..
পথ হারানোর এপথ ধরে অসীম অজানায়।...
..........বর্ষশেষের সপ্তাহে বেরিয়ে পড়ার প্রবল ইচ্ছে জেগেছিলো।..চারিদিকে শুধু বেড়ানোর গল্প।..তা আমিও অনেক গল্প দিয়েছিলাম যেখানে যাবো ভেবে সেটা আর হয়ে ওঠে নি...এদিকে আমার বাড়ি থেকেও একটা জায়গা যাওয়ার প্ল্যান ছিল সেটাও বিফলে গেল। তারপর দুয়ে দুয়ে চার ও আমরা সবাই NJP এর পথে..বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলাম পেলিং যাবো বলে কিন্তু ট্রেন এ যেতে যেতে সেটা হয়ে গেছিলো পুরোনো রেশম পথ...তারপর তো NJP ..বেশ কিছুক্ষন এই অফিসে ওই অফিসে করে একটা ঠিকঠাক tour agent ধরে চলো পানসী থুড়ি বোলেরো গ্যাংটক। .হ্যাঁ আমাদের যাত্রা শুরু গ্যাংটক দিয়ে।.পরেরদিন নাথাং।..পরেরদিন জুলুক। তারপরদিন NJP ...কিন্তু আমরা আরিতার এ থাকি।.সে অন্য কারণ।.. আর হ্যাঁ ফেরার টিকিট waiting ছিল কিন্তু WL ৪/৫/৬/৭ এ এসে তিনিও রণে ভঙ্গ দিয়েছিলেন।..আমরাও সরকারী রকেট বাস এ চড়ে আবার ঘরের ছেলে ঘরে চলে এলাম।...
......"যা বাবা..হয়ে গেলো গল্প??..এই পথ তো সবাই জানে।..এছাড়া ইচ্ছে, সিলারি, রেশি তো তুই যাসইনি তাতেই এই লেখার কি মানে আছে...?আরে সার্চ করবো আর এর চেয়েও ভালো রুট পাবো।..এখানে এসেছিস সময় নষ্ট করতে।..জানিস এখানে ঘন্টায় ঘন্টায় কি দুর্দান্ত লেখা আসে...যা যা আগে শেখ তারপর আসিস অ আ ক খ লিখতে।..."
সত্যি কথা তো। ..এটা কি লিখছি আমি...কোথায় লিখবো সাহিত্যরস সমৃদ্ধ হয়ে নাথাং থাম্বি zigzag আরিতার নিয়ে তা না...লিখতে বসেছি শুধু নাথাং নিয়ে।..তাহলে আসল কথায় আসি....
"দেখো আলোয় আলো আকাশ
দেখো আকাশ তারায় ভরা। ...."
রাত তখন ৯টা। .মোবাইলে দেখাচ্ছে -৬ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড। ..শুধু চোখ দুটো বার করে নাথাং এর রাস্তায় একাকী আমি...মাথার ওপর অজস্র তারা।..যেন পুরো আকাশ টা আমার হাতের নাগালের মধ্যে নেমে এসেছে।..দূরে daftar bunglow এর রহস্যময় উপস্থিতি।.যেদিকে চোখ যায় কোটি কোটি তারা।..জ্বলজ্বল করছে কালপুরুষ।. সমগ্র নাথাং উপত্যকায় বিরাজ করছে এক আশ্চর্য প্রশান্তি।..মাঝে মাঝে ভেসে আসছে কুকুরের ডাক...সাথে তীব্র কনকনানি হাওয়া।...আর...
"Twinkle, twinkle little star.
How I wonder what you are."
....না আকাশ ভরা তারা দেখে গান বা কবিতা কোনোটায় মনে আসেনি।..হঠাৎ যেন সেই তারা গুলোর মধ্যে দিয়ে উঁকি মারতে থাকলো আমার হারিয়ে যাওয়া প্রিয়জনরা...ছোটোবেলায় শুনতাম মানুষ মারা গেলে star হয়ে যায়...কলকাতার আকাশে ইলেক্ট্রিকের তার টপকে তাঁরা তারা হয়ে আমাদের দেখা দেয় না..কিন্তু প্রাণভরে সেদিন দেখেছিলাম আমার হারিয়ে যাওয়া প্রিয়জনদের।...বলছে এলি নাকি আমাদের কাছে।..দেখ আমরা কত ভালো আছি এই দূষণমুক্ত পরিবেশে।..গোটা একটা উপত্যকা সেদিন মেঘমুক্ত হয়ে আমায় উপহার দিয়েছিলো এক অনির্বচনীয় নৈস্বর্গিক দৃশ্যের। .আমার সামান্য মোবাইল ক্যামেরার কি ক্ষমতা তাকে বন্দি করার।..মনের ক্যামেরায় বন্দি করলাম সেই মুহূর্ত গুলো।..এই আজেবাজে খাপছাড়া লাইন গুলো যখন লিখছি তখনও চোখে ভাসছে সেই আকাশ।..
"জীবনে যদি দীপ জ্বালাতে নাহি পারো
সমাধি পরে মোর জ্বেলে দিও.."
......না সমাধির ওপরে দীপ আমায় জ্বালতে হয়নি।.সমুদ্রতল থেকে হাজার হাজার উচ্চতায় কোটি কোটি তারা দীপ জ্বেলে রেখেছে।..পারলে একবার যাবেন।..অবশ্যই যাবেন।..প্রকৃতির এই মহিমা লেন্সবন্দী করতে আমিও আবার যাবো।.কিন্তু তার চেয়েও বড় কারণ হলো..যাবো আবার নিজের প্রিয়জন দের খুঁজতে।..জানেন একটা তারা যেন মিটিমিটি হাসছিলো।..একটু একটু চেনা লাগছিলো।.ওমা..ভালো করে তাকিয়ে দেখি এক অতি প্রিয়জন। ..যেন বলছে দেখলি...কেমন ঘুমের মধ্যেই পালিয়ে এলাম তোদের বিরক্ত না করে....শুধু শেষ বারের মত একবার বাবা বলে ডাকবি?
...সেই তারাটাকে আবার খুঁজতে যেতে হবে তো নাকি।...এবার যাবো রণসাজে প্রস্তুত হয়ে...নাথাং ভ্যালি ভালো থেকো...আমি আবার আসবো। ...
Name - SUBHABRATA SANYAL
Age - 34
Profession- Service
City - Kolkata
Hobbies -SINGING & TRAVELLING
Travel Experience - SIKKIM VARANASI ALLHABAD DARJEELING VARIOUS PARTS OF INDIA